আগরতলা, ৩১ মে, ২০২৫ঃ
সিকিমের গ্যাংটকের কাছে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিখোঁজ হয়ে গেছেন ত্রিপুরার কৈলাসহরের দুই যুবক। গ্যাংটক থেকে লাচুং যাওয়ার পথে পর্যটকবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ১০০০ ফুট গভীর খাদে পড়ে তিস্তা নদীতে তলিয়ে যায়। ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে ও দুই কিশোরকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকিরা এখনও নিখোঁজ।
নিখোঁজ দুই ত্রিপুরাবাসী হলেন স্বপ্ন নীল দেব (২৬), পিতা সত্যজীত দেব, বাসিন্দা সোনামারা পুর পরিষদের ১৬ নম্বর ওয়ার্ড, এবং দেবজ্যোতী দেব (২৫), পিতা সমীরন দেব, বাসিন্দা দক্ষিণ কাচেরঘাট। তাঁদের খোঁজে উদগ্রীব পরিবার ও কৈলাসহরবাসী প্রার্থনা করছেন তাঁদের সুস্থভাবে ফিরে আসার জন্য।
ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ, উত্তর সিকিমের লাচেন-চুংথাং সড়কে চুবুম্বু ও মুনশিথাংয়ের মাঝামাঝি এলাকায়। পর্যটকবাহী গাড়িটিতে ত্রিপুরা ছাড়াও ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তরপ্রদেশের যাত্রীরা ছিলেন। সিকিম পুলিশের দায়ের করা এফআইআর (ক্রিমিনাল কেস নং ০৩/২০২৫)-এ জানা যায়, গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়।
নিখোঁজ যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন ওড়িশার বিজেপি মহিলা মোর্চার সাধারণ সম্পাদিকা ইৎশিরি জেনা (৪৬), তাঁর পরিবারের সদস্যসহ আরও কয়েকজন। উদ্ধার হওয়া দুই কিশোর—সাইরাজ জেনা (১৭) ও স্বয়ম সুপ্রতিম নায়েক (১৭)—ওড়িশার বাসিন্দা। তাঁদের চুংথাং প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পর গ্যাংটকের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
উদ্ধার অভিযানে যুক্ত রয়েছে পুলিশ, আইটিবিপি, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবক দল। অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন চুংথাংয়ের এসডিপিও অরুণ থাতাল ও পিআই তিলক ছেত্রী; তত্ত্বাবধানে রয়েছেন এসপি সোনাম ডিচু ভুটিয়া। এনডিআরএফ-ও অভিযানে যোগ দিয়েছে।
তবে আবহাওয়া খারাপ থাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় উদ্ধার অভিযান সাময়িকভাবে স্থগিত করতে হয়। তিস্তা নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপদ বেড়েছে। শনিবার সকাল থেকে ফের উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।
সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করে জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার সর্বতোভাবে উদ্ধার কাজের সহায়তা করছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মজিহ সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
উদ্ধার হওয়া প্রাণগুলো ফিরলেও বাকিদের জন্য সময়ের অপেক্ষা। নিখোঁজদের সন্ধানে এখনও প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। পরিবারের পাশাপাশি গোটা রাজ্য প্রার্থনা করছে তাঁদের জীবিত ফিরে আসার জন্য।