আগরতলা, ২ জুলাই, ২০২৫ঃ
ত্রিপুরায় রাজনৈতিক হিংসা ও প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাকে চিঠি দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, রাজ্যে আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিরোধী দলগুলোর উপর লাগাতার হামলার ঘটনা ঘটছে এবং প্রশাসন কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। মুখ্যমন্ত্রীর ‘পুলিশকে ফ্রি হ্যান্ড’ দেওয়ার ঘোষণার পর থেকে পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে বলেও চিঠিতে দাবি করেন তিনি।
বিরোধী দলনেতা চিঠিতে উল্লেখ করেন যে, শাসকদলের সমর্থকরা রাজনৈতিক বিরোধীদের উপর হামলা, লুটপাট এবং দলীয় কার্যালয়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে। তিনি বেশ কয়েকটি ঘটনার নির্দিষ্ট উল্লেখ করেছেন। যেমন, ১৭ জুন বিশালগড়ে সিপিআই(এম)-এর বৈধ কর্মসূচিতে বিজেপি যুব মোর্চার ৫০-৬০ জন কর্মী হামলা চালায় এবং প্রায় ২০টি বাইক ভাঙচুর করে পার্টি অফিসে তাণ্ডব চালায়। একই দিনে করাইমুরায় সিপিআই(এম) নেতা মোশারফ হুসেনের বাড়ি লুট করা হয়। ২১ জুন, উদয়পুরের দাতারাম বাজারে কংগ্রেসের একটি বৈধ কর্মসূচিতে হামলা হয় এবং নেতাকর্মীদের মারধর করা হয়। এছাড়াও ২২ জুন রাতে জিরানিয়া, নারসিংগর ও যোগেন্দ্রনগরে সিপিআই(এম) নেতাদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। ২৪ জুন টাকরজলা কমিউনিটি হলে টিপ্রা মোথার মুখোশধারী কর্মীরা বিরোধীদের সভায় আক্রমণ করে। ২৯ জুন কাকরাবনে সিপিআই(এম)-এর পার্টি অফিসে হামলা চালানো হয় এবং পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি বানচাল করা হয়। ৩০ জুন উত্তর তুলামুরায় সিপিআই(এম)-এর কর্মসূচি বন্ধ করতে দলীয় কার্যালয় ও পুলিশ ফাঁড়ি পরিত্যক্ত করতে বাধ্য করা হয়।
এই পরিস্থিতিতে জিতেন্দ্র চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান, যেন তিনি ব্যক্তিগতভাবে হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও সংবিধান সম্মত শাসন বজায় রাখার ব্যবস্থা করেন। চিঠির মাধ্যমে তিনি রাজ্যে শান্তিপূর্ণ ও আইনত শাসন প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।