আগরতলা, ২৩ জুন ২০২৫ঃ
ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য আজ এক গৌরবময় ও ঐতিহাসিক দিন। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছেন যে, ত্রিপুরা এখন দেশের তৃতীয় পূর্ণ সাক্ষর রাজ্য। এই সাফল্য এসেছে উল্লাস-নব ভারত সাক্ষরতা কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে।
এদিন আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের রাজ্য সাক্ষরতা মিশনের উদ্যোগে আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “সাক্ষরতা হলো নতুন জীবনের দরজা খোলার চাবিকাঠি। এটি শুধু একটি প্রশাসনিক প্রকল্প নয়, বরং একটি সামাজিক আন্দোলন।”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১৯৬১ সালে ত্রিপুরার সাক্ষরতার হার ছিল মাত্র ২০.২৪ শতাংশ। এরপর ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে ২০১১ সালে তা হয় ৮৭.২২ শতাংশ। ২০২২ সালের ১ আগস্ট চালু হওয়া ‘উল্লাস’ কর্মসূচির ফলস্বরূপ ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে সাক্ষরতার হার পৌঁছেছে ৯৫.৬ শতাংশ। এর মধ্য দিয়ে ত্রিপুরা মিজোরাম ও গোয়ার পর দেশের তৃতীয় রাজ্য হিসেবে পূর্ণ সাক্ষরতার মর্যাদা অর্জন করল। এর আগে লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে এই স্বীকৃতি পেয়েছিল।
উল্লাস কর্মসূচির আওতায় রাজ্যে গড়ে উঠেছে ৯৪৩টি সামাজিক চেতনা কেন্দ্র এবং ২,২২৮ জন স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষক-শিক্ষিকা। এদের মধ্যে অনেকেই ছাত্রছাত্রী, কলেজ শিক্ষার্থী এবং অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। মুখ্যমন্ত্রী তাদের “সাক্ষরতার সৈনিক” হিসেবে অভিহিত করেন এবং বলেন, “তাঁরা নিঃস্বার্থভাবে সমাজের জন্য কাজ করে এই মহাযজ্ঞকে সফল করেছেন।”
রাজ্যে তিন দফায় অনুষ্ঠিত ফাউন্ডেশন লিটারেসি এন্ড নিউমারেসি অ্যাসেসমেন্ট টেস্টে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রায় ৯৮ শতাংশ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন। ২০২৫ সালের মার্চে ৫,৮৯৬ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ৫,৮১৯ জন পরীক্ষায় সফল হন।
মুখ্যমন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন, ২০২৩ সালের ২৯ জুলাই দিল্লিতে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০-র তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে ‘উল্লাস-১’ লোগো, “জন জন সাক্ষর” স্লোগান এবং মোবাইল অ্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। সেই লক্ষ্যকে বাস্তব রূপ দিয়েছে ত্রিপুরা।
তিনি বলেন, “আমরা চাই আমাদের নব-সাক্ষর নাগরিকরা শুধু সাক্ষর হবেন না, দক্ষ এবং আত্মনির্ভর হবেন। শিক্ষা দপ্তরের পাশাপাশি অন্যান্য দপ্তরকে একত্র করে এই প্রয়াসকে আরও সার্থক করে তুলতে হবে।”