আগরতলা, ৫ জুলাই, ২০২৫ঃ
বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিল তিপ্রামথা দল। শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা করেন দলের বিধায়ক ও প্রাক্তন জঙ্গি নেতা রঞ্জিত দেববর্মা। তিনি জানান, এই সিদ্ধান্ত দলের প্রধান প্রদ্যুত কিশোর দেববর্মণের নির্দেশে নেওয়া হয়েছে।
রঞ্জিত দেববর্মা আরও জানান, আগামী ২১ বা ২২ জুলাই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে তিপ্রামথার বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই বৈঠকেই আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন প্রত্যাহারের ঘোষণা করা হবে।
এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই আরও একটি বড় খবর সামনে এসেছে—তিপ্রামথার সাংসদ কৃতি দেববর্মণ সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করতে চলেছেন। রাজপরিবারের সদস্য কৃতি ২০১৪ সালে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে পূর্ব ত্রিপুরা থেকে লোকসভায় নির্বাচিত হন। তাঁর পদত্যাগ রাজ্য রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২ মার্চ দিল্লিতে তিপ্রা মথা, রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার চার দিন পর ৭ মার্চ তিপ্রা মথা সরকারে যোগ দেয়। তখন দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, রাজ্যের আদিবাসীদের উন্নয়নে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
মাত্র দুদিন আগে গত তিন জুলাই ত্রিপুরা মন্ত্রিসভা বারের মত সম্প্রসারণ করে নতুন মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক কিশোর বর্মন। অনুষ্ঠানের অনুপস্থিত ছিলেন তিপ্রামথার দুই মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা ও বৃষোকেতু দেববর্মা। তাছাড়া দলের অন্য বিধায়ককেও নতুন মন্ত্রি শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দেখা যাবে।
তবে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবেশে দলটির মনোভাব বদলেছে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। সমর্থন প্রত্যাহারের ঘোষণার পর সিপিএম নেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “প্রথমে তিপ্রা মথা আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন প্রত্যাহার করুক, তারপর আমরা দেখব কী করা যায়।” কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মণের কটাক্ষ, “সাংবাদিক সম্মেলনে কিছু বলার চেয়ে, রাজ্যপালের কাছে চিঠি দিয়ে সরকার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে যাক তিপ্রা মথা। শুধু হুঁশিয়ারি দিলে চলবে না।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তিপ্রা মথার এই সিদ্ধান্ত ত্রিপুরার জোট রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের জন্ম দিতে পারে। এখন অপেক্ষা দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ও তার পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।